ঝলমলে নববর্ষ র সকাল,বাগান থেকে ফুল গুলো তুলে এনে ফুলদানি তে সাজিয়ে রাখলেন রীতা দেবী। তিন চার দিন ধরে গরম টা বেশ কম, সকাল সকাল মন্দির এ গিয়ে পুজো দিয়ে এসে, বাড়ির ঠাকুর এর নতুন আসন পেতে পুজো টা তাড়াতাড়ি সেরে ফেললেন । আজ অনেক কিছু রান্না করবেন ভেবেছেন , তিন রকমের মাছ, পাঠার মাংস, পোলাও, আম এর চাটনি। সেই মত সুবীর বাবু কে দিয়ে বাজার ও কালকে ই করিয়ে রেখেছেন।
কি করে বানাবেন বাড়িতে মালপোয়া ?
একমাত্র মেয়ে তিন্নি র বিয়ে হয়ে গেছে, প্রথম প্রথম আসা যাওয়া থাকলে এখন তিন্নি নিজের ছোটো মেয়ে, সংসার, চাকরি সামলে একদম ই আসতে পারে না।বন্ধু , অফিস পার্টি, ক্লাব, weekend trip এসব এর পর মা বাবা র কাছে আসার সময় কোথায়? তবে নিয়ম করে ভিডিও কল এ তিন্নি আসে, সুবীর বাবু বলেন আমার শেষ দিনে ও হয়তো তুই ভিডিও কল করে ই সব কাজ সম্পন্ন করবি। রীতা দেবী র খারাপ লাগলেও সুবীর বাবু বলেন দেখো টাকা দিয়ে কিন্ত সব দায়িত্ব এড়ানো যায় না, মেয়ে দামী শাড়ি কিনে দিচ্ছে, ট্যুর অপারেটর দিয়ে বেড়াতে নিয়ে যাচ্ছে , বিজয়া তে অনলাইন এ মিষ্টি পাঠাচ্ছে এগুলো না করে যদি আমাকে শরীর খারাপ এর সময় একটু ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যেতো তাতে অনেক বেশি শান্তি পেতাম।
তিন্নি নিয়ম করে নববর্ষর দিন প্রতিবার আসে, এসেই বলে মা আমরা মালপোয়া কোথায়। রীতা দেবী ভালো মতো ই জানেন মাছ মাংস ফেলে মেয়ে মালপোয়া ই খাবে, তাই একটু বেশি করে এ বানাবেন।
সমান পরিমাণে দুধ ,গুঁড়ো দুধ, ময়দা আর সুজি দিয়ে গোলা টা সকাল এই বানিয়ে রেখেছিলেন।এখন দিলেন মৌরী আর এলাচ গুঁড়ো, ছোটবেলা এ তিন্নি বলতো মা এই মৌরী আর জন্য ই কি মালপোয়া এত tasty হয়?
Frying pan এ ঘী গরম করে মালপোয়া গুলো ভেজে চিনি র রসে দেবেন, তখন ই ফোন টা বেজে উঠলো , সাড়ে বারোটা বাজে তিন্নি রা বোধ হয় বেড়িয়ে গেছে তাই ফোন করছে।
“মা please কিছু মনে কোরো না আজ যেতে পারছি না আমাদের ক্লাব এ আজ সকাল থেকে ই নববর্ষ celebration এর party, evening e আবার potluck party আছে একদম সময় নেই, দেখি next weekend এ যাওয়ার প্ল্যান করছি” ।
সুবীর বাবু মুখ দেখে ই বুঝে গেলেন মেয়ে আসবে না, পা ব্যথা নিয়ে আরো রান্না কোরো তারপর চোখের জল ফেলো ,বলে চলে গেলেন।
তোর পছন্দ মত সব করলাম তুই আসবি না? একটু বোঝার চেষ্টা কোরো মা, তোমরা খেয়ে নিয়ো।
মুহূর্তে র মধ্যে সব কেমন বদলে গেলো, ফুলদানি র ফুল গুলো যেন কেমন ন্যাতানো লাগছে, হঠাৎ করে খুব গরম লাগছে।
কলিং বেল্ এর আওয়াজ, এখন আবার কে?
“কাকু শুভ নববর্ষ , কাকিমা কোথায়? কাকিমা শুভ নববর্ষ , রোজ তো ক্যান্টিন এ খাই, আজকে একটু মাছের কালিয়া করেছি তাই তোমাদের জন্য নিয়ে এলাম” | engineering পড়ছে ওরা – দোতলা তেএকটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে চার জন এ থাকে। লিফট এ দেখা হয়, রাস্তা তে দেখা হলে কথা হয়।
কিছুক্ষন এর মধ্যে বাড়ি টা আনন্দে ভরে উঠলো, “তোরা আজ আমদের এখানেই খাবি, সব রান্না আছে শুধু ভাত টা বসিয়ে আমি আসছি, ততক্ষণে এই মালপোয়া গুলো খা , নববর্ষে আগে মিষ্টিমুখ করতে হয়” ।
ফোন বাজছে… তিন্নি calling, “মা বলছি কি যে মালপোয়া গুলো বানিয়েছো ওগুলো একটু swiggy করে দেবে, আমি evening potluck party তে নিয়ে যেতে পারব” ।
“না রে তিন্নি ওগুলো আমার potluck party তে সবাই খেয়ে নিয়েছে, ওদের এত ভালো লেগেছে যে আমি pack করে ওদের কে দিয়ে ও দিয়েছি। তুই পরে phone কর, এখন একটু busy আছি” ।
হ্যাঁ ,আজতো নববর্ষ, পুরাতনকে সাথে রেখে নতুনকে নিয়ে চলার দিন ।
শুভ নববর্ষ!
আরও কিছু খুব পছন্দের মিষ্টি রেসিপি:
- পাকা আম আর ছানা দিয়ে আমের সন্দেশ রেসিপি
- ডিম ছাড়া গুঁড়া দুধের পারফেক্ট কালোজাম মিষ্টি রেসিপি
- কেবল দুধ আর আম দিয়ে এই দুর্দান্ত আমের কুলফি বাড়িতে বানিয়ে তাকে লাগিয়ে দিন সবাই কে! 🧡🧡
- বাড়িতে বানান এই ফাটাফাটি বেকড রসগোল্লা!
Get Exclusive Recipes In your Inbox!
No Spamming. TRUST Me.
Thank you for subscribing to my email newsletter.
Something went wrong.